1. barurarkotha@gmail.com : barurarkotha : baruarkotha
  2. reporter1@barurarkotha.com : বরুড়ার কথা প্রতিনিধি : বরুড়ার কথা প্রতিনিধি
  3. admin@barurarkotha.com : unikbd :
মঙ্গলবার, ২১ মে ২০২৪, ০২:৫৬ পূর্বাহ্ন

উপজেলা নির্বাচনে মাইম্যান বসাতে মরিয়া এমপিরা

  • প্রকাশিতঃ শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪
  • ৪৯ বার পঠিত
ছবি: উপজেলা নির্বাচন

অনলাইন ডেস্ক !! উপজেলা নির্বাচনে দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তকে তোয়াক্কা করছেন না কিছু এমপি-মন্ত্রী। তারা নিজ এলাকায় ‘মাইম্যান’ বসাতে ঘোষণা করছেন প্রার্থীদের নাম। এ নিয়ে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসায় এ নিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষ বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলায় ভোট গ্রহণ হবে। এ নির্বাচনে ইতোমধ্যে অর্ধশত উপজেলায় এমপিরা তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন। যার অধিকাংশ এমপির আত্মীয়স্বজন কিংবা আজ্ঞাবহ। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, কেন্দ্র কাউকে প্রতীক না দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, উপজেলা প্রার্থীদের নাম ঘোষণা দিয়ে কিছু এমপি-মন্ত্রী দলের হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। জানা গেছে, অংশগ্রহণ ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের প্রত্যাশায় আওয়ামী লীগ হাইকমান্ড কাউকে প্রতীক দিচ্ছে না। কিন্তু কিছু এমপি-মন্ত্রীর বাড়াবাড়িতে তা বাধাগ্রস্ত হতে যাচ্ছে। কারণ এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ছাড়া অন্য দলের নেতা-কর্মীদের দলীয়ভাবে ভোটে অংশ নেওয়ার আগ্রহ খুবই কম। এমপি-মন্ত্রীদের এমন বাড়াবাড়িতে কেন্দ্রের নির্দেশনা উপেক্ষিতই থাকছে। কিছু কিছু এমপির আত্মীয়করণ কিংবা স্বজনপ্রীতি আওয়ামী লীগ অতি বাড়াবাড়ি বলে মনে করছে। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, আমাদের পরিকল্পনা হচ্ছে, অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, প্রতিযোগিতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন। সেজন্য দলীয় সভানেত্রী কাউকে প্রতীক না দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু কিছু এমপি পরিবারতন্ত্র, আত্মীয়করণ, স্বজনপ্রীতিতে সমর্থন দিচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। তারা কাউকে সমর্থন দিলেও কাজ হবে না। কারণ ভোট অবাধ ও সুষ্ঠুই হবে। প্রতিযোগিতাও থাকবে। কাজেই এমপি লীগ, ‘মাইম্যান’ বসানোর কোনো সুযোগ নেই। তারা কাউকে জোর করে বসাতে চাইলে পারবে না। উপজেলা ভোট নিয়ে সবার বাড়াবাড়ি বন্ধ করা উচিত।

জানা গেছে, গত মঙ্গলবার স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্রের ইয়ুথ ইন চত্বরে কুয়াকাটা পৌরসভা ও পৌর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় এমপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিববুর রহমান। তিনি বলেন, আগামী উপজেলা নির্বাচনে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমরা দল থেকে, আওয়ামী লীগ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আওয়ামী লীগের বিপ্লবী সাধারণ সম্পাদক ত্যাগী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মোতালেব তালুকদারকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে উপজেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক মো. ইউসুফ আলীকে দল থেকে মনোনীত করেছি। এ ঘোষণা দিয়ে তিনি উপস্থিত সবার সামনে ওই দুজনকে পরিচয় করিয়ে দেন। এ নিয়ে মিশ্র প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে স্থানীয় পর্যায়ে।

গত ২০ মার্চ কক্সবাজার সদর উপজেলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহমুদুল করিম মারুফকে একক প্রার্থী ঘোষণা করেন স্থানীয় এমপি সাইমুন সরওয়ার কমল। ওই দিন ইফতার মাহফিলে মারুফকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন স্থানীয় এমপি। গত ৭ মার্চ রংপুরের বদরগঞ্জ থানার কালুপাড়া ইউনিয়নে এক সভায় রংপুর-২ আসনের এমপি আবুল কালাম মোহাম্মদ আহসানুল হক চৌধুরী ডিউক বর্তমান বদরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বী সুইটকে পরিচয় করিয়ে দেন। এ সময় তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাচন আসছে, এখানে বসে আছেন আমাদের কৃতী সন্তান, তাকে আপনারা দুবার উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছেন। আজকে দোয়া করবেন, আগামী দিনে সহযোগিতা করবেন। কী সহযোগিতা করবেন? সবাই হাততালি দিলে ডিউক বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আর কোনো কথা নেই।’ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে বাদ দিয়ে এক বিশেষ বর্ধিত সভা ডাকা হয়। এ সভা ডাকেন স্থানীয় এমপি এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে ডাকা এ বর্ধিত সভায় কেন্দ্রীয় এই নেতার পছন্দের ব্যক্তি ইয়াকুব আলীকে উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। একইভাবে তার নির্বাচনি এলাকার আরেক উপজেলা ধনবাড়ীতে সভা করে খালাতো ভাই হারুনুর রশিদকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন ড. রাজ্জাক। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একক প্রার্থী ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন স্থানীয় এমপি মো. শাহাব উদ্দিন। তার ভাগনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শোয়েব আহমদকে প্রার্থী ঘোষণা করেন তিনি। একই নির্বাচনি এলাকার জুড়ী উপজেলায় প্রার্থী করেছেন রিংকু রঞ্জন দাসকে। নোয়াখালীর হাতিয়ায় স্থানীয় এমপি মোহাম্মদ আলীর ছেলে আশেক আলী ওমিকে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী করা হবে বলে নেতা-কর্মীদের জানিয়েছেন। সে কারণে আর কেউ প্রার্থী হওয়ার সাহস দেখাচ্ছেন না। বেগমগঞ্জের এমপি মামুনুর রশিদ কিরণের ছেলে জিহান আল রশিদকে প্রার্থী করা হচ্ছে। দলীয় নেতা-কর্মীদের মুখে মুখে এমপির ছেলের নাম। যেসব এমপি-মন্ত্রী প্রকাশ্যে প্রার্থী ঘোষণা করছেন, তারা বাদেও অনেকেই ঘরোয়াভাবে প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছেন। কারণ দল প্রার্থী না দেওয়ায় অধিকাংশ জায়গায় এমপিরাই ঠিক করছেন কারা হবেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান। স্থানীয়ভাবে এমপিরা যেহেতু প্রভাবশালী সে কারণে এমপির বাইরে গিয়ে প্রার্থী হয়ে অনেক জায়গায় প্রার্থীরা সুবিধা করতে পারবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে। আবার দল যেহেতু কাউকে প্রার্থী করছে না, সেই সুযোগ নিয়ে এমপি-মন্ত্রীরা ছেলে, মেয়ে, বউ, শ্যালক, ভাগনে, ভাতিজাসহ আজ্ঞাবহ ব্যক্তিদের প্রার্থী করে জনপ্রতিনিধি বানানোর পরিকল্পনা করছেন। এমপি-মন্ত্রীদের বলয় ভাঙতে না পারলে অতীতের মতো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। শুধু এমপি-মন্ত্রীই নন, জেলা-উপজেলা শীর্ষনেতারাও উপজেলা নির্বাচনে নাক গলাচ্ছেন। তারাও আত্মীয়স্বজনদের প্রার্থী করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করছেন।

জানা গেছে, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে তুলে নিয়ে বাড়িতে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সদর উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার সকালে সদর উদ্দিন নিজ বাড়িতে আটকে আলমগীরকে নির্যাতন করেন। আলমগীরের অভিযোগ, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সদর উদ্দিন খানের ভাই রহিম খান চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবেন। নির্বাচনে তার পক্ষে কাজ করতে বলেন সদর উদ্দিন। সেটা না মানায় তাকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী বলেন, এমপিরা যেন কাউকে প্রার্থী করতে না পারেন সেজন্য দলীয় সভানেত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। আত্মীয়করণ, স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দলের নির্দেশনা উপেক্ষা করে কোনো এমপি-মন্ত্রী প্রার্থিতা ঘোষণা করলে তা শৃঙ্খলা ভঙ্গের শামিল। দলীয় ফোরামে এ নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেয়ারঃ

এই জাতীয় অন্যান্য সংবাদ
© সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৩
Theme Customized By BreakingNews